গঠনতান্ত্রিক জটিলতায় কক্সবাজার জেলা আ’লীগ

শহীদুল্লাহ্ কায়সার ◑

চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করার তাগিদ দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করেই এই বক্তব্য দেন তিনি। কারণ ইতোমধ্যে কমিটির মেয়াদ তিন বছর অতিক্রম করেছে।
এরপর থেকেই উঠে আসে উপজেলা কমিটি গঠনের বিষয়টি। কিন্তু জেলা নেতারা কিছুতেই এই বিষয়ে এগুতে পারছেন না। শুধুমাত্র ওয়ার্ড সম্মেলন করা সম্ভব হলেও কঠিন হয়ে পড়ছে ইউনিয়ন সম্মেলন করা। উপজেলা সম্মেলন করাতো দূরে থাক; উল্টো এখন গঠনতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে গেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এখন উপজেলা সম্মেলন সম্মেলনের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রের ক্ষমতাধীন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে উপজেলা এবং থানা আওয়ামী লীগের উপর কর্তৃত্ব করার মতো ক্ষমতা জেলা আওয়ামী লীগকে দেয়া হয়নি। শুধুমাত্র উর্ধ্বতন কমিটি উল্লেখ করা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগ পেকুয়া উপজেলায় একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে। এরপর থেকেই সংগঠনের গঠনতন্ত্র এই ধরনের অস্থায়ী কমিটিকে কতটুকু ক্ষমতা দিয়েছে সেই প্রশ্নই এখন উঁকি দিচ্ছে সবার মনে।

<বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৪ (ক) ধারায় উল্লেখ রয়েছে শাখা আওয়ামী লীগসমূহকে অনুমোদন দান, বাতিলকরণ, পুনঃ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা বা প্রয়োজনবোধে যে কোন শাখা কমিটি বাতিল করিয়া তদস্থলে এড্হক কমিটি গঠন করা এবং এডহক কমিটি গঠনের ৬ মাসের মধ্যে উক্ত শাখার নির্বাচন ব্যবস্থা করা। অন্যথায় ৬ মাস পর এড্হক কমিটি বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। এই ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে কেন্দ্রের হাতে।

২৯ (ঝ) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, বিভিন্ন জেলায় পুলিশ থানার অন্তর্গত ইউনিয়নসমূহ লইয়া সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগ গঠিত হইবে। চলতি বছরের ২১ অক্টোবর সরকার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে ইদগাঁ কে থানা ঘোষণা করে। এরপর থেকে সেখানে থানা কমিটি গঠনের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়। কিন্তু থানা ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রের হাতে। ফলে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে তা কার্যকর করা সম্ভব নয়।

গতকাল ১৮ ডিসেম্বর এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইদগাঁকে থানা ঘোষণা করতে কেন্দ্রের কাছে জেলা আওয়ামী লীগ কোন ধরনের পত্র প্রেরণ করেছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, কক্সবাজার সদর উপজেলা কমিটি বাতিল করে সদর এবং ইদগাঁতে পৃথক এডহক (আহবায়ক) কমিটি গঠনের চিন্তা করছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

৪৬ (জ) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, প্রত্যেক শাখা আওয়ামী লীগকে তাহার উর্ধ্বতন শাখার নিকট হইতে অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে। ইহা ছাড়া, আবশ্যকবোধে আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ যে কোন শাখা আওয়ামী লীগের মধ্যে সংগঠন-সংক্রান্ত কোনো গোলযোগ বা বিরোধ দেখা দিলে উর্ধ্বতন শাখা উহা নিষ্পত্তি করিতে পারিবে। কিন্তু এই নিষ্পত্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট আপিল করা চলিবে এবং সেই ক্ষেত্রে উহার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।